বিশেষ এই প্রকল্পের আওতায় বেকার যুবক যুবতীদের ১ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার, আবেদন করলেই পাবেন।
রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের জন্য বিরাট বড় সুখবর। রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের এক বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। যার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের বেকার যুব সম্প্রদায় গভীর ভাবে উপকৃত হবেন। আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী একজন বেকার যুবক বা যুবতী হয়ে থাকেন তাহলে আপনিও এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করতে পারবেন। তবে তার জন্য কিছু বিশেষ যোগ্যতা থাকতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক রাজ্য সরকারের দেওয়া সেই বিশেষ পুরস্কারটি কি? পেতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে? কিভাবে আবেদন করতে হবে? কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে? এইসব বিষয় গুলির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
এতক্ষণ ধরে আমরা এ রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা রাজ্য সরকারের যে বিশেষ পুরস্কারের কথা বলে চলেছি তা হল গতিধারা প্রকল্প। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই প্রকল্পের সূচনা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয় রাজ্য সরকার। অটো, ট্যাক্সি, মারুতি, পন্য বাহী ছোট ট্রাক ইত্যাদি কেনার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। এই আর্থিক সাহায্যের দ্বারা আমাদের রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীরা পরিবহন বিভাগে ব্যাবসা শুরু করে নিজেদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে পারেন।
গতিধারা প্রকল্প কাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ও এই প্রকল্পের আওতায় কি কি সুবিধা পাওয়া যায়?
আমাদের রাজ্যের সেই সকল বেকার যুবক যুবতীরা যারা লেখাপড়া শিখে শিক্ষিত হয়েও চাকরি জোগাড় করে উঠতে পারছেন না তাদেরকে আর্থিক সাহায্য দানের মাধ্যমে নিজস্ব ব্যাবসা শুরু করতে সহায়তা করাই হল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একমাত্র ও মুখ্য উদ্দেশ্য। এই প্রকল্পের আওতায় যে যে সুবিধা গুলি দেওয়া হয় সেগুলি হল-
১) এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ব্যাবসায়িক ক্ষেত্রে গাড়ি কেনার জন্য ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়। যেমন ধরুন আপনি যদি এই প্রকল্পের আওতায় নিজের নাম নিবন্ধন করেন এবং তারপর গাড়ির ব্যাবসা খোলার জন্য ২ লক্ষ টাকা দিয়ে একটা গাড়ি কিনবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন তাহলে সেক্ষেত্রে এই ২ লক্ষ টাকার মধ্যে অর্ধেক অংশ অর্থাৎ ১ লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য সরকার। যার ফলে গাড়ি কেনার সময় আপনার কাছে যদি টাকা নাও থাকে তাহলে রাজ্য সরকারের দেওয়া এই ১ লক্ষ টাকা জমা দিয়ে আপনি গাড়িটি কিনে নিতে পারবেন। তারপর বাকি ১ লক্ষ টাকা আপনি গাড়ি ব্যাবসা করে যে লাভ করবেন তা থেকে প্রতি মাসে মাসে শোধ করতে পারবেন। এতে আপনার অনেকটাই সুরাহা হবে।
২) এই প্রকল্পের আওতায় পুরুষ মহিলা উভয় লিঙ্গের বেকারদেরকেই আর্থিক সাহায্য প্রদান করে থাকে রাজ্য সরকার।
গতিধারা প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?
গতিধারা প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে হলে যে যে যোগ্যতা গুলি থাকা জরুরি সেগুলি হল-
১) আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
২) আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ২০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে সরকারি নিয়ম মাফিক সংরক্ষিত শ্রেণীর প্রার্থীরা বয়সের ছাড় পাবেন।
৩) আবেদনকারীর পরিবারের বার্ষিক আয় ২৫ হাজার টাকার নীচে হতে হবে।
৪) আবেদনকারীর নাম পশ্চিমবঙ্গের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসে রেজিস্ট্রার থাকতে হবে।
৫) আবেদনকারীর গাড়ির লাইসেন্স ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ পত্র থাকতে হবে।
গতিধারা প্রকল্পের আওতায় কিভাবে আবেদন করতে হবে?
গতিধারা প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ টাকার সুবিধা লাভ করতে হলে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গুলি অনুসরণ করতে হবে। যেমন-
১) সবার প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহন বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
২) তারপর সেখান থেকে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে।
৩) তারপর সেখানে যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য বসিয়ে ফর্মটি সঠিকভাবে ফিলাপ করতে হবে।
৪) তারপর যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
৫) সবশেষে সবকিছু ভালোভাবে মিলিয়ে নিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আবেদন হয়ে যাবে।
আবেদন করার সময় কোন কোন ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে?
গতিধারা প্রকল্পের আওতায় অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময় তার সঙ্গে যে যে ডকুমেন্টস গুলি আপলোড করতে হবে সেগুলি হল-
১) বয়সের প্রমাণ পত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বা বার্থ সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
২) পরিচয় পত্র হিসেবে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড বা প্যান কার্ড স্ক্যান করা।
৩) বসবাসের প্রমাণ পত্র হিসেবে পঞ্চায়েত বা মিউনিসিপ্যালিটি প্রদত্ত রেসিডেনসিয়াল সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৪) পরিবারের মাসিক আয়ের প্রমাণ পত্র হিসেবে ইনকাম সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৫) আবেদনকারীর নিজের নামের ব্যাঙ্কের পাস বুকের প্রথম পাতা স্ক্যান করা।
৬) আবেদনকারীর নিজের পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।
৭) আবেদনকারীর গাড়ির পারমিশন লেটার স্ক্যান করা।
৮) এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিসে নাম নথীভুক্ত থাকার প্রমাণ পত্র স্ক্যান করা।
৯) কেন গাড়ি কিনতে চাইছেন তার কারন ব্যাখ্যা করে লেখা একটি স্টেটমেন্ট এর কপি স্ক্যান করা।
১০) আবেদনকারী যে গাড়িটি কেনার জন্য আবেদন করছেন তার সন্বন্ধে যাবতীয় বিস্তারিত তথ্য লেখা কাগজ পত্র স্ক্যান করা।
গতিধারা প্রকল্প চালু করে রাজ্য সরকার আমাদের রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে নিজস্ব ব্যাবসা শুরু করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করছে। ইতিমধ্যেই বহু বেকার যুবক যুবতী এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন। আপনিও যদি একজন বেকার যুবক বা যুবতী হয়ে থাকেন তাহলে আর দেরি না করে এই প্রকল্পের আওতায় নিজের নাম নিবন্ধন করুন এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলুন।
আরও খবর পড়ুন: CLICK HERE
নিত্যনতুন এই ধরনের প্রকল্পের আপডেট সবার প্রথমে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া হয় তাই আপনারা সকলেই টেলিগ্রাম চ্যানেলের যুক্ত হতে পারেন।
Join Telegram Channel : CLICK HERE
Hello, my name is Sujit Roy. I have been working on various jobs and informative content writing for three years. Through my experimental content writing experience, I provide valuable content on this website.