রাজ্য সরকারের নতুন এই প্রকল্পে আবেদন করলেই পাবেন 1 লক্ষ 20 হাজার টাকা | Bangla Awas Yojna Apply Now

অবশেষে শুরু হল বাংলা আবাস যোজনার টাকা দেওয়া, কারা পাচ্ছেন চেক করে নিন।


দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটল। অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ বাসীর উদ্দেশ্যে এক বিশাল বড় সুখবর ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাকে ঘিরে চলতে থাকা দুর্নীতির কারণে আমাদের রাজ্যে দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ এই প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। এবারে সেই সমস্যার সমাধান ঘটতে চলেছে। সব সমস্যা মিটে গিয়ে আবার শুরু হল বাংলা আবাস যোজনার টাকা দেওয়া। কারা কারা পাবেন এই টাকা? নতুন করে যারা আবেদন করতে চান তারা কিভাবে আবেদন করবেন? জেনে নিন এইসব বিষয় গুলির সম্পর্কে। নিম্নে এই বিষয় গুলি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।

আমাদের দেশে এখনো পর্যন্ত এমন বহু পরিবার রয়েছে যাদের মাথার উপর কোনো স্থায়ী ছাদ নেই। সেইসব দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের মাথার উপর স্থায়ী ছাদ বানিয়ে দিতেই কেন্দ্রীয় সরকার এই “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা” চালু করেছে। এইসব দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা যাতে তাদের মাথার উপর স্থায়ী ছাদ বানিয়ে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারে তার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগ। তবে এই বাংলা আবাস যোজনার আওতায় এমন বহু মানুষ নিজেদের নাম নথীভুক্ত করেছেন যারা এই প্রকল্পের আওতায় টাকা পাওয়ার যোগ্য নন। এমনি অভিযোগ ওঠার কারণে আমাদের রাজ্য অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে “বাংলা আবাস যোজনার” টাকা দেওয়া বন্ধ রয়েছে।

যারা যোগ্য নন তারাও নিজেদের নাম নথীভুক্ত করানোর কারনে যাদের সত্যিই এই টাকার দরকার তারাও পর্যন্ত এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করা থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত রয়েছেন। সেই কারণেই এইসব দুঃস্থ ও অসহায় পরিবার গুলির পাশে দাঁড়াতে এবার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন। রাজ্যের কোষাগার থেকে টাকা দিয়ে এইসব অসহায় মানুষদের মাথার উপর স্থায়ী ছাদ নির্মাণ করে দেওয়ার গুরু দায়িত্ব নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর জন্য তিনি প্রত্যেক পরিবারকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এছাড়াও নতুন করে “বাংলা আবাস যোজনার” আওতায় আবেদন পত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এ রাজ্যের রাজ্য সরকারি আধিকারিকেরা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে পরিদর্শন করে সত্যি সত্যিই যাদের মাথার উপর স্থায়ী ছাদ নেই তাদের নাম এই প্রকল্পের আওতায় নথীভুক্ত করছেন। রাজ্য সরকারের এই ধরনের উদ্যোগের পিছনে মূল লক্ষ্য হল যাতে পশ্চিমবঙ্গের কোনো পরিবার গৃহহীন হয়ে জীবনযাপন না করে।

“বাংলা আবাস যোজনার” আওতায় কিভাবে নাম নথীভুক্ত করবেন?

বাংলা আবাস যোজনার আওতায় টাকা পাওয়ার জন্য নাম নথীভুক্ত করতে হলে অনলাইন এবং অফলাইন দুই রকম ভাবেই করা যাবে। অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার ক্ষেত্রে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করে নাম নথীভুক্ত করাতে হবে। তার জন্য সোম থেকে শনি যে কোনো দিন সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে ৯১৩৭০৯১৩৭০ এই নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করতে হবে। অন্যদিকে অফলাইনে আবেদন করার ক্ষেত্রে কোনো আবেদন পত্র পূরণ করতে হবে না। একটি সাদা পরিষ্কার কাগজে “বাংলা আবাস যোজনা” প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করার আবেদন জানিয়ে আবেদন পত্র লিখে জমা দিতে হবে। আবেদন পত্রের সঙ্গে যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস যেমন আধার কার্ডের জেরক্স, ভোটার কার্ডের জেরক্স, রেশন কার্ডের জেরক্স, পাসপোর্ট সাইজের ফটো, রেসিডেনসিয়াল সার্টিফিকেট , বর্তমান বাড়ির ছবি, ব্যাঙ্কের পাস বুকের প্রথম পাতার জেরক্স যুক্ত করে জমা দিতে হবে।

“বাংলা আবাস যোজনার” আওতায় আবেদন করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?

এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে আবেদনকারীর নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকা আবশ্যিক। যেমন-

১) আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

২) আবেদনকারীর পরিবারের মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা বা তার নীচে হতে হবে।

৩) কোনো পরিবার যদি ইনকাম ট্যাক্স দিয়ে থাকেন তাহলে তিনি এই প্রকল্পের আবেদন যোগ্য নন।

৪) আবেদনকারী পরিবার যদি কৃষিকাজ ছাড়া অন্য কোনো জীবিকার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহলে তিনি এই প্রকল্পের টাকা পাবেন না।

৫) নিজস্ব পাকা বাড়ি থাকলে সেই ব্যাক্তি এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে পারবেন না।

৬) সরকারি কর্মীরা এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে পারবেন না।

৭) আবেদনকারী পরিবারের কারোর জন্য থ্রি হুইলার বা ফোর হুইলার থাকে তাহলে তার আবেদন গ্ৰাহ্য করা হবে না।

৮) যারা এই প্রকল্পের আওতায় একবার নাম নথীভুক্ত করেছেন তারা আর দ্বিতীয় বার নাম নথীভুক্ত করতে পারবেন না।

আবেদন পত্র জমা পড়ার পর রাজ্য সরকারি আধিকারিকেরা সকল আবেদনকারীর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পরিদর্শন করবেন। তারা একটি সার্ভের মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন যে আবেদনকারীরা আবেদন করার সময় যে সব তথ্য দিয়েছেন সেইসব তথ্য পুরোপুরি ভাবে সঠিক কি না। এই পরীক্ষার পর সার্ভের রেজাল্ট বিচার করে যারা যারা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ টাকা পৌঁছে যাবে।

তবে বর্তমানে যারা আগেই এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন কেবলমাত্র তাদের ই বাড়ি গিয়ে সার্ভে করে যোগ্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এখন ও পর্যন্ত নতুন করে আবেদন পত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়নি। তবে এই প্রাক্তন আবেদনকারীদের টাকা মেটানো হয়ে গেলেই নতুনদের আবেদন পত্র জমা নেওয়া শুরু করা হবে বলে সরকার সূত্রে জানানো হয়েছে।

আরও খবর পড়ুন: CLICK HERE

Join Telegram Channel : CLICK HERE

Leave a comment