WBBPE: পশ্চিমবঙ্গ প্রাইমার শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক পরিবর্তন, টেট ওয়েটেজ বাড়ল, উঠে গেল একাডেমিক্স নাম্বার

যারা যারা পশ্চিমবঙ্গে প্রাইমারি টেট পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে রয়েছেন বা ভবিষ্যতে প্রাইমারি টেট পরীক্ষা দিয়ে প্রাইমারি চাকরি করতে চান তাদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে নতুন একটি বিশাল বড় আপডেট। এতদিন পর্যন্ত প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাইমারি টেট ওয়েটেজের উপর গুরুত্ব কম ছিল। কিন্তু এবার একাডেমিক এর ক্ষেত্রে বিরাট একটি পরিবর্তন ঘটল। যেখানে একাডেমিক নাম্বার তুলে দিয়ে টেটের উপর ভিত্তি করে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হবে। কি এই পরিবর্তন এবং কবে প্রাইমারি টেট এর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বিস্তারিত জানতে অবশ্যই আপনাদের প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ে নিতে হবে। 

পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০২৫ সালে এক বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, টেট (TET) ওয়েটেজের উপর ৮০ নম্বর এবং ইন্টারভিউ ও ডেমোনস্ট্রেশনের উপর ২০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। যেখানে আগে টেট ওয়েটেজের উপর শুধুমাত্র ৫ নাম্বার ছিল এবং ইন্টারভিউ ও ডেমোস্টেশনের এর উপর ছিল 10 নাম্বার। বাকি নাম্বারগুলো সব একাডেমিক এর উপর ভিত্তি করে যুক্ত করা হতো। তবে এক্ষেত্রে যারা অনেক আগে পড়াশোনা কমপ্লিট করেছে তারা বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কম্পিটিশনে এগিয়ে যেতে পারতেন না, তাই এই পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। এই পরিবর্তন নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করতে সহায়ক হবে।

 

নতুন নিয়োগ নিয়মাবলী

১. টেট পরীক্ষার গুরুত্ব বৃদ্ধি: আগে টেট পরীক্ষা নেওয়া হতো যেটা প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা তবে এই পরীক্ষার উপরে শুধুমাত্র ৫ নাম্বার ছিল। তবে এবার এই টেট পরীক্ষার গুরুত্বটাকে সব থেকে বেশি দেখা হচ্ছে। যারা ভালো করে টেট পরীক্ষা দেবেন তাদের টেট নম্বরের ওপর ভিত্তি করে ৮০% করা হয়েছে, যা নিয়োগের মূল ভিত্তি হবে।

 

২. ইন্টারভিউ ও ডেমোনস্ট্রেশন: এতদিন পর্যন্ত ইন্টারভিউ ওর ডেমোস্ট্রেশনের উপর ছিল শুধুমাত্র ১০ নাম্বার, তবে এবার এই নাম্বারের সংখ্যা বাড়িয়ে করা হলো ২০ নাম্বার। নিয়োগের চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রার্থীদের ইন্টারভিউ এবং শিক্ষাদানের দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য ২০% নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। একজন শিক্ষকের গুণগত মান এখানে যাচাই করা হবে।

 

পরিবর্তনের মূল দিকসমূহ

• মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন: এই পরিবর্তন সকলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখন শুধুমাত্র একাডেমিক নম্বরের উপর নির্ভরশীল না হয়ে টেট পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে নিয়োগ হবে। এতদিন পর্যন্ত দেখা গিয়েছে যাদের একাডেমিক নাম্বার ভালো তারা সবার প্রথমে চাকরি পেতো তবে এবার এই নিয়মের পরিবর্তন ঘটবে।

 

• ইন্টারভিউ ও ডেমোস্ট্রেশনের ভূমিকা: এক্ষেত্রে যারা ভালো এবং উন্নত শিক্ষক হওয়ার যোগ্য তাদের এই যাচাই করে শিক্ষক করা হবে। শুধুমাত্র পরীক্ষার ফলাফলের উপর নয়, বরং শিক্ষাদানের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে শিক্ষক নির্বাচিত হবেন।

 

• নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা: নতুন এই নিয়ম চালু হওয়ার ফলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা আরো বাড়বে।

 

নতুন নিয়মের ইতিবাচক প্রভাব

• উন্নত এবং ভালো মানের শিক্ষক নির্বাচনে এই পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রার্থী নির্বাচনের মান বৃদ্ধি পাবে।

 

• ভবিষ্যতে কেমন শিক্ষক হতে পারবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কিভাবে পড়াতে সক্ষম সেটি আগে থেকে যাচাই করে নিয়োগ করা হবে।

 

• এক্ষেত্রে যারা দিন-রাত পরিশ্রম করে টেট পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে তাদের টেট পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে নিয়োগ দেওয়া হবে, এখানে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাগত যোগ্যতার তেমন গুরুত্ব থাকবে না।

 

• নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম কমবে এবং মেধাবী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

 

নতুন এই নিয়মের সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সমান গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। তাই এবার যারা পশ্চিমবঙ্গে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকতা করতে চান তাদের আগে থেকেই টেট পরীক্ষার উপর গুরুত্ব বাড়াতে হবে এবং ভালো করে টেট পরীক্ষা দিতে হবে। এর পাশাপাশি শিক্ষকদের ভালো এবং উন্নতমানের শিক্ষাদানের কৌশল শিখে নিতে হবে এবং ইন্টারভিউয়ারের সামনে ভালোভাবে উপস্থাপনের দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

Leave a Comment