পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হওয়ার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল উদ্বেগ ও চরম উত্তেজনা। এরই মধ্যে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শিক্ষকদের বেতন নিয়ে দিলেন গুরুত্বপূর্ণ বার্তা, যা চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের মনে স্বস্তির যোগান দিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য: চাকরিচ্যুতি বা বেতন বন্ধ নয়
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু চাকরি হারা শিক্ষকদের জন্য বিশাল বড় একটি ঘোষণা করেছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে কোনো শিক্ষককে স্কুল থেকে বাদ দেওয়া হয়নি, এবং কারো বেতন বন্ধ করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।” তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা চেয়ে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছে। এর পাশাপাশি তিনি আশ্বস্ত করেছেন কারো চাকরি যাবে না সকলেই চাকরি ফিরে পাবেন। মন্ত্রী আরও বলেন, “চাকরিহারা শিক্ষকদের নাম এখনও বেতন পোর্টালে থাকায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, যা প্রশাসনিক কারণে সাময়িক।” এর ফলে যাদের চাকরি চলে গিয়েছে তারা সকলেই আপাতত ভাবে বেতন পাবেন।
কসবায় সংঘর্ষ নিয়ে প্রতিক্রিয়া
চাকরিহারা শিক্ষকেরা দিকশুন্য হয়ে গিয়েছেন এবং তারা তাদের হকের চাকরি ফিরে পেতে বিভিন্ন আন্দোলন অনশন করছেন। এরই মধ্যে কসবায় আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের মুখোমুখি হওয়া এবং লাঠিচার্জের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমরা এই শিক্ষকদের পাশে রয়েছি, তবে প্রত্যাশা করি তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালাবেন।” সরকার চাকরি হারাদের পাশে সর্বদাই রয়েছে। তবে যেহেতু পুলিশের লাঠিচার্জ এবং নির্মম অত্যাচারের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়ে গিয়েছে তাই এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেননি।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি: ‘চাকরি যাবে না’
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ঘোষণা করে জানিয়ে দিয়েছেন – আমি বেঁচে থাকতে একজনকেও চাকরি হারাতে দেব না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি-হারা শিক্ষকদের বলেছেন তাদের স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে স্কুলে উপস্থিত থাকতে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার পড়ে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল তোড়পাড়। শিক্ষকদের দাবি তারা বেতন নিয়ে চাকরি করতে চান কেন তারা স্বেচ্ছ শ্রম দেবেন। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় চাকরি-হারা প্রার্থীরা আন্দোলন করছেন।
ইতিমধ্যেই শিক্ষা দপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে যারা যেরকম বেতন পেতেন তারা সেভাবেই বেতন পাবেন আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কারো বেতন বন্ধ করা হবে না। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন তারা যদি আইনিভাবে রাজ্যের চাকরি হারাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে না পারেন তাহলে তাদের কাছে বিকল্প পদ্ধতিও রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকের দাবি বর্তমানে এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারকে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে সচেষ্ট হতে হবে।
ইতিমধ্যেই শিক্ষক সংগঠনগুলো আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাইছেন এবং এর পাশাপাশি সরকারের সঙ্গেও পরামর্শ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই যোগ্য চাকরি হারারা তাদের চাকরি পুনরায় ফিরে পাবেন এমনটাই আশা করা যাচ্ছে।