দক্ষিণবঙ্গে প্রকৃতির রুদ্র রূপ! নিম্নচাপের প্রভাবে আসছে ঝড়-বৃষ্টি, কলকাতাসহ একাধিক জেলায় সতর্কতা

By Target Chakri

Published on:

পশ্চিমবঙ্গের নিরিখে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানাল ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD)। ইতিমধ্যেই আন্দামান সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্ত ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এই সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় শুরু হতে চলেছে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টিপাত। দক্ষিণবঙ্গে প্রবল উত্তাপ তাই নিম্নচাপের প্রভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড় বৃষ্টি হলে গরমের হার কিছুটা কমবে।

ইতিমধ্যে আবারো কলকাতাবাসীকে বিশেষ সতর্কতা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। দু-একদিন ধরে কোলকাতা শহরের আকাশ ইতিমধ্যেই মেঘলা হয়ে উঠেছে, আর বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গরমের অনুভূতি বাড়ছে, এই তীব্র গরমে জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে বলা হয়েছে আজ ও আগামীকাল শহরে ৩০-৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর ইতিমধ্যেই জানিয়েছে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রি বেশি।

যে সমস্ত বাসিন্দারা উপকূলবর্তী তাদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের তরফ দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ থেকে লতিয়ান আইল্যান্ড পর্যন্ত এক মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সকলকে সতর্কতা অবলম্বনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রে উত্তাল অবস্থার কারণে মৎস্যজীবীদের আগামী ২৪ ঘণ্টা সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।

ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের আরো বেশ কিছু জেলার অবস্থা আশঙ্কাজনক । দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাগুলোর মধ্যে বাঁকুড়া, বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানে ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে, এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জেলায় যেমন মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ায় ভারী বৃষ্টির সঙ্গে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।

দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতেও আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা দেবে। উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলাতে যেমন দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে আগামী তিনদিন ধরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই নিম্নচাপের প্রভাবে রাজ্যজুড়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে সাধারণ জনগণ যদি বাইরে বের হয় তাহলে তাদের বিশেষ সতর্কবার্তা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে গাছের নিচে না দাঁড়ানো, বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে দূরে থাকা এবং বজ্রপাতের সময় বাড়ির ভেতরে অবস্থান করার নির্দেশনা দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলাগুলোতে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে এবং দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। আবহাওয়ার এই অস্থিরতা কমপক্ষে এক সপ্তাহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিকের দিকে আসবে।

Leave a Comment