পুজোর পরেই রাজ্যে ২৫ হাজার শূন্যপদে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ | WEST BENGAL PRIMARY TEACHER TET RECRUITMENT

হাতে গোনা আর মাত্র ২ দিন। আর তার পরেই শুরু হতে চলেছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। আর তার পরেই আমাদের রাজ্যের টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছে এক বিশাল বড় খুশির খবর। পুজোর পরেই সারা রাজ্য জুড়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষা।‌ যার মাধ্যমে সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ২৫ হাজার শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে। টেট পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ মহলে তোরজোড় ও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সরকার সূত্রে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে গত দুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলা মিলিয়ে প্রাইমারি টেট পরীক্ষার মোট কতগুলি সেন্টার রয়েছে তার হিসাব চাওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল এই প্রসঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে পুজোর পর রাজ্য জুড়ে টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এটা নিশ্চিত তবে টেট পরীক্ষার দিন এখন পর্যন্ত ধার্য্য করা হয়নি। তবে দিন ধার্য্য না হলেও পর্ষদ এই পরীক্ষার প্রস্তুতিপর্ব সেরে রাখতে চাইছে। তিনি এও জানিয়েছেন যে পুজোর পরেই প্রাইমারি টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেওয়া হবে।

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ মাথার উপর খাড়া হয়ে ঝুলছে রাজ্য সরকারের। অত্যন্ত বেহাল অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এইরূপ পরিস্থিতিতে এই বেহাল দশা মুক্তি পাওয়ার একমাত্র রাস্তা হল প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলিতে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ করা। কিছু মাস আগে আমাদের রাজ্যের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন যে ২০২৪ এর দুর্গাপুজোর আগেই আমাদের রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যাবতীয় কার্যকলাপ শুরু করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে রাজ্য সরকার। সেইসঙ্গে তিনি এও জানিয়েছিলেন যে এবার থেকে প্রত্যেক বছর বছর নিয়ম করে আমাদের রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ও শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।

পরবর্তী কালে অবশ্য তার এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আইনি জটিলতা দেখা দেওয়ায় শিক্ষামন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে অনেক পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। যার দরুন শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তুতির কাজে বাধার সৃষ্টি হতে থাকে। তবে অবশেষে এই বাধা কাটিয়ে জোর কদমে শিক্ষক নিয়োগের কাজে মন দিয়েছে শিক্ষা পর্ষদ। আমরা সকলেই জানি যে গত ৭ বছর আগে ২০১৭ সালে আমাদের রাজ্যে যে প্রাইমারি টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল তার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ২০২৪ এর জানুয়ারি মাসে। ৭ বছর ধরে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্তিমিত রয়েছে। সেই নিয়োগের কাজই আজ পর্যন্ত সম্পূর্ণ করা যায়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আবারো নতুন করে টেট পরীক্ষা নিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ২০১৭ সাল থেকে আটকে থাকা এই অসমাপ্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার সমাধান ঘটাতে খুব তাড়াতাড়িই এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত করতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটি। সরকার সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

দুর্গাপুজোর পরে পশ্চিমবঙ্গে যে টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তাতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা নয় নয় করে হলেও কয়েক লাখ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এক হাজার দু হাজার নয় একসাথে ২৫ হাজার শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের এই ঘোষণা টেট পরীক্ষার্থীদের কাছে এক দুর্দান্ত খুশির বার্তা বয়ে আনবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের তরফে এও জানানো হয়েছে যে শুধুমাত্র প্রাইমারি স্কুল গুলিতেই যে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে এমনটা নয় তার সঙ্গে সমান তালে রাজ্যের আপার প্রাইমারি ও হাই স্কুল গুলিতেও খুব শিগগিরই শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। সেইসঙ্গে প্রতিটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সুতরাং খুব শীঘ্রই আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের স্কুল গুলিতে শিক্ষকের অভাব মিটতে চলেছে ও লেখাপড়ার মান উন্নত হতে চলেছে বলে আশা করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উৎসশ্রী প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে সেই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের স্কুল গুলির শিক্ষকরা এদিকে ওদিকে বদলি হয়ে যাওয়াতে আমাদের রাজ্যে যে প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলি রয়েছে সেখানকার স্কুলের শিক্ষকেরা নিজেদের সুবিধার্থে শহরাঞ্চলের স্কুল গুলিতে চলে যাওয়ার কারনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল গুলিতে শিক্ষকের অভাব দেখা দিচ্ছে যার ফলে লেখাপড়া ক্ষেত্রে চরম সমস্যার সন্মুখীন হতে হচ্ছে সেখানকার পড়ুয়াদের। তবে নতুন করে করে শিক্ষক নিয়োগ হলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Source: CLICK HERE 

Leave a comment